বুধবার, ৮ মে, ২০১৯

ঘৃণাই তাদের একমাত্র প্রাপ্য


দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় আজ ৮ই মে ২০১৯ এ প্রকাশিত সম্পাদকীয় পাতায় দক্ষিণ এশিয়ার বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক আলতাফ পারভেজের লেখা কলাম “ইমরান খান কি কথা রাখবে?” পড়তে গিয়ে এর উপ-শিরোনামে চোখ আঁটকে গেল। “পাকিস্তানে বাংলাভাষী”।
জীবনের ২৪ টি বছর পেরুতে গিয়ে কখনো এমনটি মনে হয় নি যে, পৃথিবীর অনেক দেশেই বাংলাভাষা-ভাষী যেমন আছে ঠিক তেমনি এদেশের জাতশত্রু পাকিস্তানে বাঙ্গালী থাকতে পারে। সত্য বলতে, সত্যিই আমি আগে জানতাম না।
কলামটি পড়তে গিয়ে একাধিক প্রশ্ন মাথার মধ্যে গিজ্‌ গিজ্‌ করতে লাগলো। লেখকের তথ্যমতে,
লেখকের তথ্যমতে, “করাচিসহ পাকিস্তানে বসবাসকারী বাংলাভাষীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৯৪৭–পরবর্তী আজকের বাংলাদেশ থেকে কাজের সন্ধানে যাওয়া মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে চলে এসেছিল। কেউ কেউ ইতিমধ্যে গড়ে তোলা পেশা হারাতে চায়নি বলে রয়ে গেছে। এ রকম অনেকে পরে নিকটাত্মীয়দের সেখানে নিয়ে গেছে।“
এখন প্রশ্ন হচ্ছে-
(ক) মুক্তিযুদ্ধের মতো দূর্বিসহ সময়ে কেনো তারা এদেশে অর্থ্যাৎ তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে ফিরে আসে নি।
- তবে কি তারা পশ্চিম-পাকিস্তান সরকারের সেই সময়কার হীন-কর্মকান্ডকে সমর্থন করেছিল নাকি নিজেদেরকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতেই সেখানে ছিল ?
(খ) পূর্ব-পাকিস্তান নানা সময়ে আন্দোলনমুখর হলেও পশ্চিম-পাকিস্তানে বসবাসরত বাঙ্গালীরা আন্দোলন করে নি।
- তবে কি তারা পাকিস্তানকেই নিজেদের আশ্রয়ভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছিল ?
লেখকের যে তথ্য সবচেয়ে অবাক করার মত তা হলোঃ “মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কেউ কেউ সেখানে নিজেদের গড়ে  তোলা পেশা হারাতে চায়নি বলে রয়ে গেছে।“
যে সময় তাদের সহজাত বাঙালি ভাইয়েরা দূর্বার আন্দোলনে নিজেদের রক্ত পানি করছিলো। মা-বোনেরা যখন এদেশকে স্বাধীন করতে নিজেদের সম্ভ্রম বিলিয়ে দিতেও কুন্ঠাবোধ করে নি, তখন তারা নিরবে পেশাগিরি মনোভাব নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থানরত।
তাই দেশ স্বাধীনের ৪৮ বছর পরেও সেই কলঙ্কিত দেশে আজ যখন নিজেদের নাগরিকত্ব সমস্যায় জর্জরিত, তখন তাদের প্রতি আমাদের কোনো সহানুভূতি- সহমর্মিতা নেই, যতটুকু আছে তা শুধুই সমবেদনা।
কিন্তু এই সমবেদনাটুকু পাবারও তিল পরিমাণ যোগ্যতা এদেশের স্বাধীনতা বিপক্ষের সেই দেশে থাকা বাঙ্গালীদের আছে কি না ভাববার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মূলত ঘৃণাই তাদের একমাত্র প্রাপ্য বলে আমি মনে করি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন